কাজল মিত্র:- রবিবার এক ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী হল আসানসোল। ১৯৩৬ সালে নির্মিত ইস্কো স্টিল কারখানার পাঁচটি কুলিং টাওয়ার মাত্র পাঁচ সেকেন্ডে ধূলিসাৎ হয়ে গেল। এই টাওয়ার গুলো শুধু কারখানার কার্যক্রমের অংশই ছিল না,আসানসোলের জন্য একটি ঐতিহাসিক ল্যান্ডমার্কও ছিলো। কারখানার পিআরও ভাস্কর কুমার জানান, ইস্পাত তৈরির প্রক্রিয়ায় জল ঠান্ডা করতে ব্যবহৃত এই টাওয়ার গুলোর জায়গায় এখন নতুন উন্নয়নের পরিকল্পনা রয়েছে।৭২ মিটার উঁচু এবং ৩০ থেকে ৪৫ মিটার প্রস্থের এই টাওয়ার গুলো দূর থেকে দৃশ্যমান হওয়ায় আসানসোলের পরিচয় হিসেবে কাজ করত।স্থানীয়রা এগুলো দেখিয়ে কারখানা বা শহরের অবস্থান বোঝাতেন। ভাস্কর কুমার বলেন, “সময়ের সঙ্গে পরিবর্তন আসে। আধুনিক প্রযুক্তির যুগে এই টাওয়ার গুলোর বিকল্প হিসেবে হাই-টেক মেশিন এসেছে, যা কম জায়গায় আরও কার্যকর।”

তিনি জানান,এই জমিতে নতুন কারখানার স্থাপনের পরিকল্পনা চলছে, যা কারখানার উন্নতির জন্য জরুরি।টাওয়ার গুলো ভাঙতে দক্ষিণ আফ্রিকা ও মুম্বাই থেকে দুটি বিশেষজ্ঞ সংস্থাকে নিয়োগ করা হয়।গত ছয় মাস ধরে তারা বিস্ফোরক স্থাপনের কাজ করছিলো।কড়া নিরাপত্তার মধ্যে রবিবার এই ধ্বংস কার্য সম্পন্ন হয়, এবং আশপাশের এলাকায় কোনও ক্ষতি হয়নি বলে নিশ্চিত করা হয়েছে।স্থানীয়দের কাছে এই টাওয়ার গুলো ছিল সৌন্দর্য ও গর্বের প্রতীক। একজন বাসিন্দা বলেন, “এগুলো আমাদের ঐতিহ্য ছিল, যা আর ফিরবে না।” তবে তারা এটাও মানেন যে, নতুন কারখানার মাধ্যমে কর্মসংস্থান বাড়বে, যা দেশের জন্য সুখবর।
এই ঘটনা আসানসোলের অতীতের এক অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটালেও, ভবিষ্যতের জন্য নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলেছে। ইস্কো স্টিল কারখানার এই পদক্ষেপ ঐতিহ্য ও উন্নয়নের মধ্যে এক সেতু বন্ধনের প্রতীক হয়ে থাকবে।